সময়ের অপেক্ষা

সময়ের অপেক্ষা
কিভাবে এখানে চলে আসলাম কিছুই মনে পড়ছে না।যতদূর বুঝতেছি ল্যাব থেকে এখানে চলে আসছি।গায়ে তখনও ল্যাবের সাদা এপ্রোন। আর এখন আমি যে কোনো গ্রামে সেটাও বুঝা যাচ্ছে।এই তো টিনের চাল মাটির ফ্লোর। গ্রামে যেন ফ্লোর কে ওরা কি বলে?সেটাও মনে পড়ছে না। ঘরটায় অনেক হৈ চৈ,কাউকে যে জিজ্ঞেস করবো কি চলছে সেই সুযোগ টাও নেই।সবাই ব্যস্ত। এক দল মানুষ উদ্ভান্ত আর কিছু মানুষ তাদের থামানোয় ব্যস্ত। এই মুহূর্তে নিরব থেকে ঘটনা বুঝে নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
মানুষ গুলা বের হতে চাচ্ছে ঘর থেকে। তারা দাবি করছে তারা নির্দোষ তাদের কে কেউ কিছু বলবেনা তাদের বাসায় যেতে দিতে।তারা সবাই স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী,বাচ্চা সাথে বাচ্চার গার্জিয়ান। আর যারা তাদের বুঝাতে পারছেনা এখন নির্দোষ প্রমাণ করার সময় না।বাইরে মিলিটারি উত পেতে আছে, তারা দেখবেনা নির্দোষ কিনা। এর মধ্যেই একটা মেয়ে চোখের পলকে বাইরে চলে গেল দৌড়ে। কেউ খেয়াল করার আগেই গুলির শব্দ তারপর আরো একটা।পর পর আরো দুইটা।এরপর সব নিরব। সামনের মানুষ গুলাও নিস্তব্ধ। শুধু একজন মহিলা কান্নায় ভেংগে পড়লেন।সাথে তার ৪-৫ বছরের ছোট মেয়ে অপলক দৃষ্টিতে মায়ের কাছে দাঁড়িয়ে আছে।হয়তো মেয়েটা উনারই বড় মেয়ে।স্বান্তনা দেয়ার মত ভাষা জানা নেই কারো।কিছুক্ষন পর আমারও আর বুঝতে বাকি নেই আমিও এদের মত কোন যুদ্ধ ক্ষেত্রে আটকা পড়ে গেছি।এখানে কিছু একটা নিয়ে আন্দোলন চলছে।ছাত্র আন্দোলন।অনেকটা আমাদের সময়ের সেই 'নিরাপদ সড়ক চাই' দাবিতে আন্দোলন এর মত।কিন্তু এই আন্দোলন কিসের জন্য?ছাত্ররা এতই কেন ক্ষেপে উঠছে যে যুদ্ধ লেগে গেছে?সাল টা কত এখন?
সারাঘরে ফিসফিস কথার শব্দ। সবার মধ্যেই আতংক।সায়মার আম্মু আমার পাশে বসে এখনো কেঁদেই যাচ্ছে।চাপা সুরে।ওই পাশে তার ছোট্টো মেয়েটা।গায়ে ময়লা লেগে আছে।কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে আমার দিকে।মায়া হচ্ছে।আবার মনে হচ্ছে আমি এখানে শুধু একটা বাড়তি ক্যারেক্টার, আমার তো এখানে থাকার কথা না।তখন মনে পড়লো আমার তো লুফির জন্য হ্যাম্প সীড নিয়ে যাওয়ার কথা!লুফি তো সীডস এর মধ্যে হ্যাম্প টা বেশি পছন্দ করে।কিন্তু বাবা কে নিয়ে আর পারা গেল না।কে যেন বলে দিছে হ্যাম্প নাকি গাঁজা বীজ সেই থেকে বাবার কথা আমি নাকি ওদের গাঁজা খাওয়াই।এবার ওদের খাবারের মিলেট টাও ভালো পড়ে নি।আবার নিয়ে যেতে হবে।কিন্তু পাড়বো তো নিয়ে যেতে! আবারো গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে। একটা স্কুল ড্রেস পড়া মেয়ে বাইরে যেতে চাচ্ছে ওর মা কিছুতেই যেতে দিবেনা।ওর বয়সে তো আমিও ছিলাম!মনে হচ্ছে ৯-১০ এ পড়ে হয়তো।এই সময়ই তাই তো ভুল করার সময়।আমিও করছি।কিন্তু ওকে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না।আমি কাছে গেলাম।মেয়েটার কাঁধে হাত রেখে ওর চোখের দিকে যখন তাকালাম তখন আমি শুধু আগুন দেখলাম ওই চোখে। যে আগুন একবার জ্বলে উঠলে সব থামিয়ে দিতে পাড়ে!আমাকে দেখে চুপ হয়ে গেলো কেন বুঝলাম না।শুধু বললাম 'সময়ের অপেক্ষা করো'
তখনই বাইরে আবার গোলাগুলির শব্দ।কিছুক্ষন টানা ফায়ার তারপর আবার নীরব।ঘরে এখন শুধু সায়মার মা না পুরো ঘর জুড়ে গুনগুনিয়ে কান্নার শব্দ।এভাবে কত সময় পাড় হয়ে গেল জানি না।এখন কয়টা বাজে? কাকেই বা জিজ্ঞেস করবো! সবাই কেমন কেমন করে যেন তাকাচ্ছে!আমার নিজেরই আনইজি লাগছে। হঠাৎ রুমে ২ জন মেয়ে ঢুকলো।বয়সে আমার থেকে বড় ই হবে।এখানে না থাকলে স্বাভাবিক ভাবে আমি হয়তো অনায়াসে তাদের আপু সম্বন্ধ করে ফেলতাম।বাইরে থেকে কেউ একজন কিছু পৌঁছে দিয়ে গেছে যা তারা ভিতরে আনতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে।উঠে দেখলাম খাবার পানি।ঘটনার পরিপেক্ষিতে সবাই শীতল হয়ে গেছে। আমি উঠে গিয়ে তাদের সাথে হাত লাগালাম। জানিনা এই খাবার এখন আর কেউ খেতে পারবে কিনা শুধু জানি কই থেকে যেন দায়িত্ব চলে এসেছে।মেয়ে দুজন আমার দিকে তাকিয়েও ছিল কিছুনা বলে। তাদের কাজ শেষে তারা সেলিম ভাই কে নিয়ে কিছু একটা বললো যদিও জানি না কে এই সেলিম ভাই।শুধু শুনলাম 'কিছু খেয়ে তো শক্তি যোগাতে হবে!শক্ত থাকেন আপনারা সুযোগ বুঝে এখান থেকে সরায় নেয়া হবে'। তারা চলে যাচ্ছিল আবার ঘুরে আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো 'তুমি আসো আমাদের সাথে' আমার এখন একদম ই ভয় করছে না।বাইরে তখন পড়ন্ত বিকেল।সায়মা কি তখন এই দরজা দিয়ে বেরিয়েছিল?আমার একপাশে বিশাল ফাঁকা উঠান!ছোটবেলায় এমন উঠান পেলে গোল্লাছুট কিংবা এক্কাদোক্কা খেলায় মেতে যেতাম!আর এই এত বড় উঠান টা এখন খা খা করছে।আশেপাশের সবকিছুই কেমন ফাঁকা।আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো আরো ভিতরের ঘরে।সেখানে সবাইই ক্ষত বিক্ষত। কারো পা বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে তো কেউ হাত দিয়ে রক্ত থামানোর চেষ্টা করছে।এত আহত ব্যাক্তির তুলনায় সেবা দেয়ার মত মানুষ খুব নগন্য।এই মুহূর্তে কি করা উচিত বুঝে উঠতে পারছি না । আমিও দাঁড়িয়ে না থেকে হাত লাগালাম ব্যান্ডেজ বাধায়।নাহ এখানে সেলাই দেয়ার মত ছোট খাটো সার্জারীর ও ব্যবস্থা নেই। যতদূর পারা যায় কাপড় বেধে রক্তের বাধ তৈরী করাই শুধু কাজ। ইতিমধ্যে কয়েকজনের নাম ও জেনে গেছি।যে ডেকে নিয়ে এসেছিলেন তিনি নিলা।বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ছাত্রী। এর বেশি জানার মত সময় সুযোগ কোন টাই পাইনি।শুধু এক ফাঁকে তাকে বললাম 'আমি তো ডাক্তার নই' বিনিময়ে তার উত্তর 'এখানে কে ডাক্তার তুমি কি খুঁজে বের করতে পারবে?' এরপর আমার আর কিছুই বলার নেই।আমিও কাজ শুরু করে দিলাম তাদের সাথে।এখন আর মনে হচ্ছেনা আমি এখান কার না।শুধু জানি আমাকে বের হতে হলে যুদ্ধ করেই বের হতে হবে।
কত সময় পার হয়ে গেছে জানিনা।থেকে থেকে গোলাগুলির শব্দ আর ঘরের ভিতর আর্তনাদ। একজন দুই জন করে আহতের সংখ্যা বেরেই যাচ্ছে । আর বেরে যাচ্ছে নতুন মানুষের সংখ্যা।মাঝে মধ্যে এ ঘর ওঘর যেতে আসতে হচ্ছে তবুও কেন যেন মৃত্যুর ভয় হচ্ছেনা। মাঝে মধ্যে আবার স্বান্তনাও দিতে হচ্ছে।সায়মার মা এখন আর কাদঁছে না।পাথরের মত বসে আছে টিনের দেয়ালে।
হঠাৎ কেউ একজন আমার সামনে পথ আটকে দাঁড়ায়। ২৬-২৮ বছরের এক পুরুষ।আমি কয়েক পলকের জন্য তার চোখের দিকে তাকাতে পেড়েছি।রক্ত বর্ণ চোখ দুটো নির্ঘুম তবু ক্লান্ত নয়।এমন চোখের দিকে বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকা যায় না।আমিও পাড়ি নি তাকিয়ে থাকতে।চোখ বন্ধ করতেই নিলা আপুর কন্ঠ 'ওকে আসতে দে সেলিম ও আমাদের ই একজন'। তবুও কান চেক করে নিল কানে কিছু লাগানো কিনা।আমি বুঝতেও পারলাম না কখন তাদের একজন হয়ে গেছি। সেলিম ভাই আমাদেরকে খাবার আনার জন্য বললেন। আর বলে গেলেন জরুরি মিটিং বসানো লাগবে এখনই।নিলা আপু আমাকে বাধা দিলেন বললেন 'এখানেই থাকো,গন্ডোগোল অনেক টা চেপে এসেছে কখন কি হয় বলা যায় না।' আমি নাছোড়বান্দা যাবোই। তারপরও একবার বললেন 'এটা কিন্তু এখান থেকে এখানে না দূর আছে।'কে শুনে এখন!বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত নিয়েই যেতে হলো।সে ঘরে আরো অনেক মানুষ বয়স্ক নারী-পুরুষ, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র আরো অনেকেই হয়তো তারাও কোন না কোন প্রতিষ্ঠানের ছাত্র।সবাই এক জোট হয়েছে কিভাবে বিজয় ছিনিয়ে আনা যায় সেই লক্ষ্যে আর তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে সেলিম ভাইয়ের দল।জানিনা এরপর কি হতে যাচ্ছে। মন খুব তাড়াতাড়িই এই যুদ্ধ শেষ হবে।
আমি তখন খাবার আর কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ফিরে আসছিলাম।আমার সাথে আরো কয়েকজন।তবে সাথে আরো একটা নতুন মুখ। না আহত না।মনে হয় সেও আশ্রয় নিয়েছে ।কালো বর্ণের রুক্ষ চেহারার এক মেয়ে।মেয়েটা কিছু একটা নিয়ে খুব চিন্তিত।আমিই আগ বাড়িয়ে কথা বলতে গেলাম, নাম জিজ্ঞেস করলাম কিন্তু কোন জবাব পাওয়ার আগেই প্রচন্ড শব্দে কিছু একটা ছুটে গেল মাথার উপর দিয়ে। পিছে তাকিয়ে শুধু দেখতে পারলাম ১০/১২ টা গাড়ি ছুটে আসছে এদিকে।সাথে প্রচুর গোলাগুলির শব্দ । এক দৌড়ে পালিয়ে চলে এলাম সেই প্রথম ঘর টায়।ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দিলাম ।মনে হচ্ছে আমি বেঁচে নেই।বাইরে এখনো প্রচন্দ শব্দ। কানে তালা লাগিয়ে দিচ্ছে। এখন আর থামি নাই একের পর এক ফায়ার করা হচ্ছে।আমার পাশে কালো বর্ণের মেয়েটা হাঁপাচ্ছে।তবে আমাদের সাথের আর কাউকে দেখতে পেলাম না।মনে মনে শুধু বলে যাচ্ছি থেমে যাবে সব থেমে যাবে।
থেমেও গেল একসময়।এখন পরিস্থিতি অনেকটা নীরব।মেয়েটা পিছনের জানালা খুলছে অল্প একটু।মেয়েটা কি পাগল!!ওকি জানে ও ধরা পড়লে কি হতে পারে এখন! তখনই বলে উঠলো 'বাবা!আপু আমার বাবা...' ঘটনা কি দেখার জন্য আমিও জানালার কাছে চলে এলাম।একটা আহত লোক কে ধরে পাশের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।ক্ষত বেশি না।একটা পা আহত হয়েছে।'আপু একটু পিছনের দরজাটা খুলতে দিবা?একটু বের হতে দিবা?একবার দেখেই চলে আসবো' খুব মায়া হলো ওর কথায়। পিছের দরজা টা খুলে রাস্তায় নেমে এলাম ওর সাথে আমিও।ওর বাবাকে দেখার সুযোগ পায়নি।তার আগেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে।মেয়েটা কাঁদছে আমার সামনে। আস্তে করে বললাম 'বাইরে থাকাটা এখন নিরাপদ না চলো ফিরে যাই।তোমার বাবা সুস্থ হয়ে যাবেন।সব কিছু ঠিক হয়ে গেলে তুমিও তোমার বাবাকে বাবাকে দেখতে পারবে।' ফিরে আসছিলাম ঘরের দিকে। আকাশের দিকে তাকিয়ে থেমে গেলাম।রাত কত গভীর হয়েছে তাও জানিনা। অন্ধকার আকাশে তারা গুলোই শুধু দেখা যাচ্ছে। দরজার কাছে চলে আসছি তখনই পিছন থেকে কেউ ডাকলো
'এই যে আপনে!আপনে একটু আসেন তো আমাদের সাথে!'
তাকিয়ে দেখি ভয়ংকর চেহারার এক লোক।পান খাওয়া দাঁত বের করে করে বিচ্ছিরি ভাবে হাসছে।এমন অবস্থাতেও মানুষ হাসে কিভাবে?লোক টার পিছে চোখ গেল। অন্ধকারেও দেখতে পাচ্ছি পিছে মিলিটারি পোষাকে আরো কেউ হাসছে।আমি তো মুক্তিযুদ্ধের সেই রাজাকার গুলোকে দেখিনি।তাহলে আমার সামনে কে??
'আরে ভয় পায়েন না আসেন আসেন!স্যার আপনাকে ডাকে, আপনেই তো সব কিছুর ডাইরেকশন দিতাছেন তাই আপনের যাওয়া লাগবে এখন। ডাক্তার মানুষ স্যার একটু শান্তি চুক্তি করবে এই আর কি!ভয় নাই'
এরপর আর বুঝতে বাকি নেই সবকিছু আমাকে ঘিরে হচ্ছে তার কারন আমার গায়ের এই ল্যাবের এপ্রোন।আর এটাও খুব ভালো ভাবে বুঝতেছি ধরা খেয়ে গেছি আর তাদের সাথে গেলে কি হবে! কিন্তু আমি পালানোর মত শক্তি পাচ্ছিনা।মনে হচ্ছে পাথরের মত জমে গেছি।হঠাৎ কেউ একজন টান দিয়ে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল।সেই মেয়েটা যাকে প্রথম দেখে রুক্ষ মেজাজের মনে হয়েছিলো। এখন আর কিছুই মনে হচ্ছেনা,কানে কোন শব্দ ঢুকছে না! ঘরের এক কোণায় এসে লুকিয়ে আছি কিছুক্ষন পর ঘরের দরজায় টোকা দেয়ার শব্দ 'ঠক ঠক' একবার থেমে আবার 'ঠক ঠক' কে বাইরে? তারা কি যায় নি?নাকি সেলিম ভাই?আমার আর উঠার শক্তি নেই।দরজা খোলার মত সাহস নেই আবারও 'ঠক ঠক'
ধর ফর করে উঠে পড়লাম।নাহ, ওখানে না আমি আমার রুমেই আছি। আমার বিছানার উপর, গায়ে কোন সাদা এপ্রোনও নেই। এতক্ষন কই ছিলাম কিছু আর ভাবতে চাইনা।সব ই রাত জেগে ড্রামা দেখার সাইড ইফেক্ট ভেবে নিজে কে স্বান্তনা দিচ্ছি।এই তো লুফি হ্যম্প ছাড়া সীডস খাচ্ছে।দেশ তো কবেই স্বাধীন হয়ে গেছে!কিন্তু আসলেই কি স্বাধীন দেশে আমরা স্বাধীন?স্বাধীন ভাবে আমি আমার মত প্রকাশ করতে পারবো? স্বাধীন ভাবে বাসা থেকে বের হতে পারবো?নাকি ঘরে থাকতেই কেউ ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যাবে 'একটু আসেন, স্যার/বড় ভাই/ম্যাডাম আপনাকে ডাকে' বলে,যেখান থেকে আর ফিরতে পারবো না?জানি না, আমি সেটাও জানি না।
লেখাঃমেহজাবিন বিনতে আজাদ

Comments

Popular posts from this blog

পৈশাচিক আনন্দ

ব্ল্যাক হোলে যা ঘটবে